ডেস্ক রিপোর্ট:
দিল্লির একটি আদালত ভারতের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মকবুল ফিদা হুসেনের দুটি বিতর্কিত চিত্রকর্ম জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, এসব চিত্রকর্ম হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) পাতিয়ালা হাউস কোর্ট দিল্লি পুলিশকে চিত্রকর্মগুলো জব্দের অনুমতি দেন। খবর বিবিসির।
অভিযোগ অনুযায়ী, দিল্লি আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শিত দুটি চিত্রকর্মে হিন্দু দেব-দেবীকে নগ্ন রূপে চিত্রিত করা হয়েছে, যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার শামিল। গত ২৬ অক্টোবর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্যালারিতে হুসেনের ১০০টিরও বেশি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়েছিল। গ্যালারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আইনি প্রক্রিয়ার অংশ নয় এবং বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ নিচ্ছে।
আইনজীবী অমিতা সচদেবা ৪ ডিসেম্বর প্রদর্শনী পরিদর্শন করে চিত্রকর্মগুলোর ছবি তোলেন। পরবর্তীতে ৯ ডিসেম্বর দিল্লি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। ১০ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে গ্যালারিতে গিয়ে তিনি দেখতে পান, বিতর্কিত চিত্রকর্ম দুটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে গ্যালারি কর্মকর্তারা দাবি করেন, তারা কখনোই ওই চিত্রকর্ম প্রদর্শন করেননি।
সচদেবা আদালতে সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের আবেদন জানান। তদন্ত শেষে পুলিশ জানায়, প্রদর্শনীটি ব্যক্তিগত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছিল এবং এতে কেবল শিল্পীর মৌলিক কাজ তুলে ধরা হয়েছিল।
মকবুল ফিদা হুসেন, যাকে ‘ভারতের পিকাসো’ বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরেই তার সাহসী শিল্পকর্মের জন্য বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছেন। ২০০৬ সালে তার ‘মাদার ইন্ডিয়া’ শীর্ষক চিত্রকর্মে ভারতের মানচিত্রের আকারে নগ্ন এক নারীকে উপস্থাপন করায় অশ্লীলতার অভিযোগ ওঠে। বিতর্কের মুখে তিনি দেশত্যাগ করে লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করেন এবং ২০১১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
২০০৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হুসেনের বিরুদ্ধে আনা অপরাধমূলক মামলা খারিজ করে দেন। আদালত মত দেন, শিল্পীর কাজ ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অন্যদিকে, সম্প্রতি বোম্বে হাইকোর্ট এফএন সাউজা ও আকবর পাদামসির একটি চিত্রকর্মকে অশ্লীল হিসেবে জব্দের আদেশ প্রত্যাখ্যান করেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, নগ্নতা সব সময় অশ্লীলতার সংজ্ঞায় পড়ে না।