নিজস্ব প্রতিবেদক:
মগবাজারের আমবাগানের পাগলাবাজার। অন্যান্য দিনের মতো গতকাল বুধবার সন্ধ্যায়ও টিনশেড ভাড়া বাসায় বসে প্রতিবেশী ২-৩ নারীর সঙ্গে খোশগল্প করছিলেন সাথী আক্তার। হঠাৎ বিশালদেহী একটি মহিষ ছুটে তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ে।
শিং দিয়ে আঘাত করে সাথীসহ অন্যদের। প্রাণীটির শিংয়ের আঘাতে সাথীর পেট চিরে যায়। সংকটাপন্ন অবস্থায় মগবাজারের কমিউনিটি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে মহিষটি ফের ছুটতে থাকে। রাস্তায় প্রাণীটির গুঁতোয় আহত হন আরও সাতজন। তাদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন– রনি (৩০), তাঁর স্ত্রী নাদিয়া (২৪) ও শামছু (৪৫)।
মগবাজারের বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী মো. রাজীব জানান, অনেক দিন ধরে আলম নামে এক ব্যক্তি সপ্তাহে এক দিন মগবাজারের আমবাগান এলাকায় মহিষের মাংস বিক্রি করেন। ওই মহিষ কিনে বুধবার আলম তাঁর বাসার সামনে বেঁধে রাখেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে রশি ছিঁড়ে মহিষটি ছুটতে থাকে। পাগলাকাণ্ড ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর পর মহিষটি হাতিরঝিল লেকে নেমে পড়ে। রাত ১১টা পর্যন্ত এর খোঁজ মেলেনি। রাজীব আরও জানান, নিহত সাথীর গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর। তাঁর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। স্বামী সাইদুল পেশায় বাবুর্চি।
নাহিদ নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বুধবার সন্ধ্যার দিকে এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। ওই সময় অন্ধকারের মধ্যে একটি মহিষ কোথা থেকে ছুটে এসে লোকজনের ওপর চড়াও হয়। এর শিংয়ের গুঁতোয় একজনের পা ভেঙেছে। আহত হয়েছেন অনেকে।
হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে একটি দল পাঠানো হয়। ওই দলে থাকা এসআই রূপম চৌধুরী বলেন, মহিষটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। নিহতের স্বামী মহিষ মালিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে না চাওয়ায় মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মহিষটি কেন হঠাৎ এমন আচরণ করছে, তা তাৎক্ষণিক বলা কঠিন। বন্য মহিষ হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ করে। এটা বন্য মহিষ হতে পারে। এ ছাড়া জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মহিষটি এমন আচরণ করতে পারে।