পরিস্থিতি বিবেচনায় নিজেদের জাহাজ রক্ষার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে রণতরি ও টহল বিমান পাঠাতে যাচ্ছে জাপান। মধ্যপ্রাচ্য থেকে জাপান তার মোট চাহিদার মধ্যে ৯০ শতাংশ অশোধিত তেল আমদানি করে থাকে। কিন্তু সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে দেশটির মন্ত্রিসভা অঞ্চলটিতে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা শুক্রবার জাপান মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ওই নথিটি দেখতে পেয়েছে, যাতে এসব তথ্যের কথা উল্লেখ রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, হেলিকপ্টার সম্বলিত একটি রণতরি এবং দুটি পি-৩সি টহল বিমান মোতায়েন করা হবে। যা তথ্য সংগ্রহহের মাধ্যমে জাপানের জাহাজের নিরাপদ চলাচলে সহযোগিতা করবে।
এছাড়া জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, যাতে করে যদি কোনো জরুরি পরিস্থিতি তৈরি কারও অনুমোদন ছাড়াই তিনি জাপানি জাহাজ রক্ষায় সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র ব্যাবহারের নির্দেশ দিতে পারবেন। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে সাক্ষাতে, পারস্য উপসাগরে নৌবাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনার নিয়ে আলোচনা করেন।
গত বছর থেকে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন করে আরও উত্তেজনা শুরু হয়। মূলত ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় বিশ্বের ৬ শক্তিধর দেশের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে ইরানের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে উত্তেজনা চরমে ওঠে।
গত মে ও জুন মাসে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে তেলবাহী ট্যাঙ্কারসহ বেশ কিছু নৌযানে হামলার ঘটনা ঘটে। তারমধ্যে জাপানের মালিকানাধীন কোকুয়া কারেজিয়াসও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ওই জাহাজে হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করে আসছে, তবে তেহরান সেই অভিযোগ প্রত্যাখান করে।
জাপান যুক্তরাষ্ট্রের বড় মিত্র হলে ইরানের সঙ্গে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। তাইতো দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক মহরায় যোগ না দিয়ে নিজেরাই মিশন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী মাস থেকে টহল বিমান ও ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন হবে।
জাপান মন্ত্রিসভার অনুমোদিত নথিতে দেশটির এই সামরিক পর্য্বেক্ষণ মিশনকে ওমান উপসাগর, উত্তর আরব সাগর, আদেন উপসাগরে টহল দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে ইরান উপকূলে অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্যের বড় রুট হরমুজ প্রণালীতে টহল দেয়ার অনুমতি দেয়নি মন্ত্রিসভা।