মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার ফলে ঈদের আমেজ নেই রায়পুরের জেলেপল্লিতে

প্রকাশিত: ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০২৪

জেলা প্রতিনিধি,লক্ষ্মীপুরঃ 

ইলিশসম্পদ তথা জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস মেঘনা নদীর রায়পুরসহ ১০০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলছে। মেঘনা নদীতে অন্য মাছেরও দেখা নেই। এছাড়া মহাজনের দাদন, এনজিওর কিস্তি নিয়ে দিশেহারা এসব জেলেরা। ফলে জেলে পরিবারগুলোতে নেই ঈদের আমেজ।

ঈদে তাদের অনেকের ঘরে নিজেদের কেনাকাটা দূরের কথা, ছেলেমেয়েদের জন্যও কেনা হয়নি নতুন কোনো পোশাক। ঘরে সেমাইও রান্না হবে কি-না, তাই নিয়ে হতাশায় দিন কাটছে তাদের। জানতে চাইলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘নদীতে জাটকা ধরা নিষিদ্ধ এবং অন্য মাছও না থাকায় জেলেপল্লি­তে এবার ঈদে কোনো উত্সবের আমেজ দেখা যাচ্ছে না। নতুন পোশাক না কেনায় ঘরে ঘরে বয়ছে কষ্ট আর হতাশা।’

সরেজমিনে জেলেপল্লি­ নাইয়াপাড়া ও হাজীমারা ঘুরে দেখা গেছে, আড়তগুলোতে জাটকা ইলিশ ছাড়াও অন্য মাছের কেনাবেচা নেই। জেলেরা এক বুক আশা নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে যান। কিন্তু দিন শেষে নদীতে মাছ না পেয়ে খালি হাতে বাড়িতে ফিরে আসেন। যে দুই-চারটি মাছ জালে ধরা পড়ে, তা বিক্রি করে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের জ্বালানি খরচও উঠছে না।

দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘রায়পুরে ১২ হাজার জেলে রয়েছেন। এদের ৯০ ভাগই উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের বাসিন্দা। রমজান ঈদকে সামনে রেখে পরিবারগুলো চরম অর্থ সংকটে দিন কাটালেও সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় সাহায্য করা যায়নি। তবে, জাটকা রক্ষার কর্মসূচির আওয়ায় ৬ হাজার জেলেকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।’

রায়পুর খাসেরহাট মত্স্যজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তফা বেপারী বলেন, ‘জাটকা ধরা বন্ধ থাকায় জেলেদের জালে পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়ছে না। এতে জেলেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। বিগত দিনে এ সময়ে জেলেদের পকেট জমজমাট থাকত। ঈদের আগেই ছিল উত্সবে আমেজ। কিন্তু এবার অন্য বছরের তুলনায় নদীতে মাছ কম ছিল। তাই জেলেদের ঈদও করা হবে না।’ এ বিষয়ে উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘রায়পুরে প্রায় ১২ হাজার জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে ভিজিএফের আওতায় ৮ হাজারের মতো জেলে আছে। জাটকা ধরা জেলে আছেন ৬ হাজার। এর মধ্যে আমরা ৮ হাজার জেলে দুই মাস নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এ সময় বিভিন্ন উপকরণও দেওয়া হয়েছে। এর পরও জেলেরা সংকটে রয়েছেন। ’