জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
নওগাঁর বদলগাছীতে মাদক সেবনরত অবস্থায় আটক এক ছাত্রলীগ নেতাসহ দুইজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার জিধিরপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে আটকের পর অভিযুক্তদের এক বছর করে কারাদণ্ড দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিয়া খাতুন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার জিধিরপুর গ্রামের মৃত সামছুল হকের ছেলে সুমন হোসেন (৩৫) এবং শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে সাব্বির আহমেদ বাপ্পি (৩২)। বাপ্পি বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে আছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আতিয়া খাতুন বলেন, বঙ্গবন্ধু কলেজের পাশেই জিধিরপুরে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের কারবার করে আসছিলেন সুমন ও বাপ্পি। তাদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের পাশাপাশি বিক্রির সঙ্গেও সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে সুমনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে নেশাজাতীয় মাদকদ্রব্য বুপ্রেনরফিন ইনজেকশন সেবনরত অবস্থায় পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক সুমন ও বাপ্পিকে আটক করে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পর অভিযুক্ত সুমন ও বাপ্পিকে সন্ধ্যার আগেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) সালমান হোসেন বলেন, ছাত্রলীগে কোনো মাদক সেবনকারীর জায়গা হবে না। বাপ্পির মাদকসহ আটকের ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে স্থায়ীভাবে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের জন্য জেলা ছাত্রলীগ বরাবর সুপারিশ করা হবে। সার্বিক বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে আলোচনা চলছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বদলগাছী উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার অনেক আগে থেকেই নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বাপ্পি। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও ছিল। সবকিছু জেনেও জেলা ছাত্রলীগের উচ্চ পর্যায়ের এক নেতার অনুরোধে বাপ্পিকে সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। তিনি এখন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির আহমেদ রেজভী বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের সময় অনেকেই বাপ্পির বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে নানা অভিযোগ দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার কথাও শুনেছিলাম। এরপরও স্থানীয় এক নেতার অনুরোধে তাকে কমিটিতে ১ নম্বর সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগেও তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আসায় সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওই কলেজের সভাপতি-সম্পাদককে নির্দেশনা দিয়েছিলাম। এরপরও যদি সে মাদকে জড়িয়ে পড়ে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিগগির ওই কলেজে ছাত্রলীগের পুরো কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।