মাদারীপুরে আট মাসের সন্তানকে রেখে স্ত্রীকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী কারাগারে

প্রকাশিত: ৬:৪২ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২৩

যৌতুকের ৫ লাখ টাকা দিতে না পারায় তিন মাস আগে ৮ মাসের শিশু সন্তানকে রেখে নাজমিনকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে স্বামী কাওসার আহম্মেদেকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায় আদালত।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার ভ্যানচালক ফেরদাউস বেপারীর মেয়ে নাজমিনের সঙ্গে দুই বছর আগে ডাসার উপজেলার দক্ষিণ ভাউতলী গ্রামের ইদ্রিস মুন্সীর ছেলে কাওসার আহম্মেদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন ভালো কাটলেও তারপর থেকে নানাভাবে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে নাজমিনের পরিবারকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ভ্যানচালক ফেরদাউস বেপারী ৩ লক্ষ টাকা মেয়ে জামাই কাওসারের হাতে তুলে দেন। কিছুদিন পর তাদের সংসারে আলিশবা নামে এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। গত ১৪ মার্চ (মঙ্গলবার) আবারও নাজমিনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে কাওসার। পরিবার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শিশু আলিশবাকে রেখে নাজমিনকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় কাওসার। এরপর থেকে স্বামী কাওসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি নাজমিন ও তার পরিবার। পরে উপায় না দেখে সন্তানকে ফেরত পেতে আদালতের দারস্থ হয়েছেন তিনি। এদিকে ঘটনার ৩ মাস হয়ে গেলেও নাজমিন জানে না তার সন্তান কেমন এবং কোথায় আছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে জামিন নেওয়ার জন্য আসলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে উক্ত আসামি কাওসারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার আসামি পেশায় ঢাকা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী।

বাদী নাজমিন বলেন, আমি আমার স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চাইছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী যৌতুকের জন্য মারধর চালাতো। অনেক কষ্ট করে মুখ বুজে সহ্য করছিলাম। কিন্তু টাকার জন্য আমার দুধের বাচ্চাটারে রেখে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আজ ঘটনার প্রায় তিন মাস হয়ে গেছে কিন্তু আমার বাচ্চার কোনো খোঁজ নাই। আমার বাচ্চাটা বেঁচে আছে না মেরে ফেলেছে, আমি কিছুই জানি না। আমি আমার বাচ্চারটারে ফেরত চাই। সে আমাকে না জানিয়ে আর একটা বিয়ে করছে। আমি তার শাস্তি চাই।’

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোসলেম আকন জানান, আসামি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে কিন্ত কোনো নোটিশ আসে নাই তার স্ত্রীর কাছে এবং সবচেয়ে বড় অপরাধ করেছে ৮ আট মাসের শিশুকে সে রেখে দিয়েছে। আইনে আছে ১৮ বছর (প্রাপ্ত বয়স্ক) না হওয়া পযন্ত মায়ের কাছে থাকবে তার সন্তান। আর এই অপরাধে আসামিকে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।