মুন্সীগঞ্জে থানা ঘেরাও করে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা যুবদলের সদস্য মো. তরিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর থানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে শ্রীনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি মামলার এজহার নামীয় আসামি হিসেবে মো. তরিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের নেতারা থানায় এসে আসামী মো. তরিকুল ইসলামকে ছেড়ে দেয়ার জন্য শ্রীনগর থানা পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। আসামি ছেড়ে দিতে রাজি না হওয়ায় থানা ঘেরাও করে মিছিল করেন যুবদল ও ছাত্রদলের প্রায় দেড়শ’ কর্মী।
এক পর্যায়ে রাত ১০টার দিকে যুবদল নেতা তরিকুল ইসলামকে থানার ভেতর থেকে ছিনিয়ে নেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১০ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
নাম প্রাকাশ না করা শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঘটনার আগে প্রথমে থানায় আসেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মৃধা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমদাদুল হক, ছাত্রদলের সভাপতি আশরাফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। তারা আসামি ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে চাপ দিতে থাকেন। পুলিশ তাতে রাজি না হলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা থানা থেকে বের হয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, আমি থানাই যাইনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো একটি পক্ষ মিথ্যা দোষারোপ করার চেষ্টা করছে। থানা থেকে কোনো আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এমন হতে পারে, যে আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল, সে রাস্তা থেকে পালিয়ে গেছে। এখন এটিকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার নাটক সাজানো হচ্ছে। তবে পালিয়ে যাওয়া ওই আসামিকে ধরতে তিনি তার লোকজনদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে কাজে লাগিয়েছেন।’
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিএনপির নেতাদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করি। ভেতরে যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলাম। তবে বাইরে যারা ছিলেন তারা আমাদের পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে আসামিকে লকআপ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, আমাদের কাছে সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেই সঙ্গে ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু করেছি।