ডেস্ক রিপোর্ট :
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মস্কোয় সাক্ষাৎ করেন মোদি। চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ন্যাটো সম্মেলন শুরুর এক সপ্তাহ আগে তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। ন্যাটো সম্মেলনে ইউক্রেন পরিস্থিতিকে শীর্ষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এ মধ্যে মোদির সফরে ক্ষুব্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রকাশ্যে বাইডেন প্রশাসন যদিও পুনরুক্ত করেছে, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার। তার পরও মস্কোয় মোদির সফর ওয়াশিংটনের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়ের বলেন, তাদের সঙ্গে ‘সম্পূর্ণ ও খোলামেলা সংলাপ’ আলোচনা হয় তাদের। মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির যে সম্পর্ক, তাতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করতে পুতিনকে অনুরোধ করার ক্ষমতা রাখে ভারত, বলেন তিনি।
ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, ভারতীয় নেতার রাশিয়া সফর, মোদি প্রশাসনের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়। যা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক দিক থেকে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, বাইডেন প্রশাসনের জন্য সফরটি কঠিন এবং অস্বস্তিকর ছিল। তৃতীয় দফায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে রাশিয়াকে বেছে নিয়েছেন তিনি।
এর আগেই বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে মোদির এ সফরে নজর রাখার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার মোদির রাশিয়া সফর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেছেন, রাশিয়া সফরে গিয়ে মোদি কী বক্তব্য দেন, সে বিষয়ে আমরা নজর রাখব। তবে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বন্ধুত্বের বিষয়ে ওয়াশিংটন ইতোমধ্যেই দিল্লির কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আশা করে, ভারত বা যে কোনো দেশ যখন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে, তখন তারা মস্কোকে জাতিসংঘ সনদ মেনে চলার কথা মনে করিয়ে দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের সমালোচনা করে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, তারা হিংসায় জ্বলছে। নিবিড়ভাবে এ সফরের দিকে নজর রাখছে তারা। তাদের নজরদারিই এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে।
রাশিয়া সফরে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে তাঁর এ সফরে নাখোশ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা। এ সফরকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের মিত্র মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখার সূক্ষ্ম পথে হাঁটছে নয়াদিল্লি। ভারতকে ছাড় মূল্যে তেল এবং অস্ত্র সরবরাহ করা গুরুত্বপূর্ণ দেশ রাশিয়া। তবে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এবং চীনের সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠতার ফলে সময়ের পরীক্ষিত এই মিত্রের সঙ্গে মস্কোর সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।