
বিনোদন ডেস্ক:
মোশাররফ করিম মানেই অভিনয়ের বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা। তিন দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন তিনি। মঞ্চ-ছোটপর্দা-বড়পর্দা মিলিয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বৈচিত্র্যময় সব চরিত্র দিয়ে বরাবরই আলোচনায় থাকেন এ অভিনেতা। ভিখারি থেকে কোটিপতি, ভালো-মন্দ চোর-পুলিশ-ডাকাত-ভূত এমন কোনো চরিত্র নেই যাতে অভিনয় করেননি তিনি।
আশফাক নিপুণের পরিচালনায় ‘মহানগর-১’ ও ‘মহানগর-২’ সিরিজে ওসি হারুন চরিত্রে অভিনয় করে দারুণভাবে নতুনভাবে জানান দেন নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে। মহানগরে ওসি হারুনের ডায়ালগগুলো এখনও ভক্ত-শ্রোতাদের মুখে মুখে। ওসি হারুন এবারও পুলিশ অফিসার হয়ে হাজির হচ্ছেন। তবে এবার আর ছোটপর্দায় নয়, বড় পর্দায়।
‘চক্কর ৩০২’-এ এবার পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা ‘মইনুল’ হয়ে আসছেন আগামী ঈদুল আজহায়। থ্রিলার, রহস্যের গল্পটি পরিচালনা করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। ক’দিন আগে বেশ নাটকীয় কায়দায় ঈদের মুক্তির ঘোষণা নির্মাতা। সিনেমার পরিচালক শরাফ আহমেদ জীবন ফেসবুকে চার মিনিট ৮ সেকেন্ডের এক ভিডিও পোস্ট করে জানিয়ে দেন ঈদে মুক্তির ঘোষণা। তার ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘মোশাররফ করিমের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছেন শরাফ আহমেদ জীবন। এ কোন নতুন চক্কর?’
ভিডিওতে দেখা গেছে, পরিচালক জীবনকে হাত-মুখ বেঁধে অন্ধকার ঘরে একটি চেয়ারে বসিয়ে রেখেছেন মোশাররফ করিম। বিরক্তি নিয়ে জীবনকে তিনি বলেন, “তুমি অনেক যন্ত্রণা দিয়েছ আমাকে। এজন্য আটকে রাখা হয়েছে।”
সবশেষ দেখা যায় মূলত ঈদে মুক্তির ঘোষণা দিতেই এই কাণ্ড। যাই হোক অ্যানাউন্সমেন্ট এই ঘোষণা দারুণভাবে গ্রহণ করেন দর্শক। ফলে সিনেমাটি নিয়ে নতুনভাবে আলোচনায় আসে। এরপর প্রকাশ করা হয় টিজার। যে টিজার জানান দেওয়া হয়, হত্যা রহস্য ঘিরে আবর্তিত হবে সিনেমাটির গল্প। যেখানে উঠে আসবে জীবনের নানান অন্ধকার। সব মিলিয়ে টিজারটি বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
সিনেমার গল্প নিয়ে পরিচালক জীবন বলেন, “গল্পটা আমাদের নিজেদের গল্প, দেশের গল্প। একটা মানুষের সম্পর্কের গল্প। দর্শক যদি গল্পের সঙ্গে, চরিত্রের সঙ্গে নিজেদের কানেক্ট করতে পারে তাহলে সিনেমাটি পছন্দ করবে। এখানে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না।”
‘চক্কর’ সিনেমায় মোশাররফ করিমের বিপরীতে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। সঙ্গে আছেন তারিন জাহানসহ অনেকেই। সিনেমাটি মূলত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত। ২০২১-২২ অর্থবছরে ‘চক্কর’ সিনেমার জন্য অনুদান পান জীবন। প্রথমে সিনেমাটির নাম ছিল ‘বিচারালয়’। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে ‘চক্কর ৩০২’।
সিনেমাটিতে মোশাররফ করিম অভিনয় করেছেন মঈনুল চরিত্রে। মঈনুল একজন পুলিশ অফিসার, যে কিনা নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়ে। এটি থ্রিলার গল্প। সেই সঙ্গে মানবিক দিকও আছে। আরও আছে সম্পর্কের কথা।
মোশাররফ করিম বলেন, পরিচালক জীবন আমার পছন্দের মানুষ। তাঁর কাজের ধরন আলাদা। এখানে পরিচালক সুন্দর ও ভিন্ন গল্প বলার চেষ্টা করেছেন। আমার বিশ্বাস, গল্পটা সবার ভালো লাগবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের করা প্রমোশনাল ভিডিওটি সবার দৃষ্টি কেড়েছে। দর্শকরা হলে গিয়ে চক্কর দেখবেন এটি আমার প্রত্যাশা। চক্কর সবার জন্য।
শুটিং হয়েছে ঢাকা শহর, মানিকগঞ্জ, দিয়াবাড়ি, জৈনাবাজারসহ নানা জায়গায়। সদরঘাটেও শুটিং হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, চক্কর জীবনের গল্প। আমাদের গল্প। সবার গল্প। সবাই মিলে দেখার গল্প।
পরিচালক নিশ্চিত করেছেন বেশ কয়েকটি হলে ঈদে মুক্তি পাচ্ছে চক্কর। শুরুর দিকে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে জোর দেবেন মুক্তির বিষয়ে। মোশাররফ করিম এই সিনেমা নিয়ে বেশ উৎফুল্ল। তাঁর দর্শকরাও অনেক দিন পর ঈদে নতুন সিনেমা পাচ্ছেন। এদিকে ঈদে অনেক তারকার সিনেমাই মুক্তি পাচ্ছে। সেখানে নতুন সংযোজন হচ্ছে মোশাররফ করিমের চক্কর।