
ক্রীড়া ডেস্ক:
জায়ান্ট স্ক্রিনের এক পাশে মেহেদী হাসান মিরাজকে অভিনন্দন জানিয়েছে টেস্টে ২০০ উইকেট প্রাপ্তিতে। অন্য পাশে লেখা তিন উইকেটে ম্যাচ জিতেছে জিম্বাবুয়ে। ছোট লেখার পাশে খুবই মূল্যহীন মনে হচ্ছিল মিরাজের প্রাপ্তি। আসলে দল হেরে গেলে ব্যক্তিগত অর্জনের কোনো মূল্য থাকে না। রেকর্ডকেও তখন স্বার্থপর স্বার্থপর মনে হতে থাকে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তাই মিরাজকে নিয়ে কোনো প্রশ্নও হয়নি। জিম্বাবুয়ের কাছে হার নিয়ে ব্যবচ্ছেদ হলো।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও মিডিয়ার পরিস্থিতি বুঝে ব্যর্থতা নিজের কাঁধে নিয়ে কঠিন সব প্রশ্নের হাত থেকে নিস্তার পেতে চেষ্টা করেন। আসলে এ ছাড়া কিছু করারও ছিল না তাঁর। নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় সারির টেস্ট দলের কাছে চার দিনে ম্যাচ হারে কারও ভালো লাগার কথা না। জিম্বাবুয়ের কাছে তিন উইকেটে হারের টেস্ট ম্যাচে বোলারদের এক চিমটি লড়াই ছাড়া তেমন কোনো প্রাপ্তি নেই।
পেস বোলিং ইউনিটকে কাজে লাগাতে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার সিদ্ধান্ত। অথচ প্রথম ইনিংস বাদ দিলে তিন পেসার হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, খালেদ আহমেদ কিছুই করতে পারেননি। দুই স্পিনারের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ ছিলেন উজ্জ্বল। উভয় ইনিংসেই পাঁচ উইকেট করে পেয়েছেন তিনি। ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করে টেস্টে ২০০ উইকেট প্রাপ্তির মাইলফলকও ছুঁয়েছেন। বোলাররা কিছুটা লড়াই জমাতে পারলেও ব্যাটিং পারফরম্যান্স হতাশ করা। শান্তর মতো মোটেও ভালো ক্রিকেট খেলেননি তারা। ফলে জিম্বাবুয়ের কাছে পরাজয় দিয়ে সিরিজ শুরু করতে হয়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দলকে।
অবশ্য ছোট দলের কাছে এই ব্যর্থতা হতাশ করলেও সমর্থকদের মতো বিমর্ষ না শান্তরা, ‘অবশ্যই হতাশার, ওভারঅল পুরো ম্যাচটা যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যার কারণেই ম্যাচ হারা। অতিরিক্ত হতাশা, এটা বলব না। কারণ, এটি আরেকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। ভালো করতে না পারায় কিছুটা হতাশ। এতটুকুই।’
জিম্বাবুয়েকে ১৭৩ রানের ছোট টার্গেট দেওয়ার পরও মেহেদী মিরাজ আর তাইজুল ইসলামের চেষ্টায় শেষ দিকে লড়াই জমিয়ে তুলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। স্কোর বোর্ডে টার্গেটের জায়গায় আর ৫০টা রান বেশি থাকলে ফল উল্টে যেতে পারত। শেষ মুহূর্তের লড়াই আশার সঞ্চার করেছিল কিনা, জানতে চাওয়া হলে টাইগার দলপতি বলেন, ‘ওখানে মিরাজ ও তাইজুল ভাই অসম্ভব ভালো বোলিং করেছে। বোর্ডে এ রকম রান থাকার পরও ওরা যেভাবে চেষ্টা করেছে, সেটাকে ক্রেডিট দিতে হবে। আমার কাছে মনে হয়, বোর্ডে পর্যাপ্ত রান ছিল না।’
বাংলাদেশ চার উইকেটে ১৯৪ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল। শান্ত ৬০, জাকের আলী ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই জুটির কাছে বড় রান প্রত্যাশা করেছিল দল। সেখানে শান্ত বাজে শট খেলে আউট হয়ে দলকে বিপদের মুখে ঠেলে দেন। অধিনায়কের আউটের পর জাকের জুটি বাঁধার জন্য সঙ্গী পাচ্ছিলেন না। মিরাজ, তাইজুলের কেউই রান করতে পারেননি। এজন্যই শান্তর কাছে মনে হচ্ছে, পুরো ব্যর্থতার তাঁর কারণে।
তাঁর মতে, ‘এই ম্যাচে আমি আসলে সবার দিকে যেতে চাই না। আমি আউট না হলে বড় রান হতে পারত। পুরো ম্যাচটা আমি একাই হারিয়ে দিয়েছি। পুরো দায়ভারটা আমি নিতে চাই।’ বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করেন, রান করার জন্য দারুণ উইকেট ছিল। ব্যাটাররা ধৈর্য দেখালে বড় স্কোর করার সুযোগ ছিল। সেখানে কেউই ভালো করতে পারেনি। সিলেটের স্পোর্টিং উইকেটে ম্যাচ হারলেও চট্টগ্রামে ট্রু উইকেটে খেলতে চান শান্ত। কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুকে সেভাবে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে।