নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এতে তিনজনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেলেও এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। শুক্রবার (৯ জুলাই) সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এদিকে আগুন নেভাতে বিলম্ব হবার কারণ জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এতে ডেমরা, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের নারায়ণগঞ্জ জেলার উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফীন বাংলানিউজকে জানান, আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল ভোরের দিকে, সকালে আবারো বেড়ে যায় আগুন।
আমরা কাজ করছি। পুরো কারখানায় ছিল অতিরিক্ত দাহ্য পদার্থ। আমরা যখনি আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনি তখনি আবারো আগুন বেড়ে যায়। ক্যামিকেলের দাহ্য পদার্থের কারণে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
তিনি জানান, এই দাহ্য পদার্থের কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে এবং হতাহত হয়েছে। দাহ্য পদার্থে আগুন দ্রুত ছড়ায়। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা বা তদন্ত কমিটি হয়নি। আমরা আগুন নেভানোর পর এ ব্যাপারে কাজ শুরু করবো। কেউ দোষী হলে তাকে দায়ী করে মামলা হবে নয়তো তদন্ত কমিটি করে এখানে দোষ কার খুঁজে বের করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সাত তলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচ তলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এক পর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করে। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না ও মিনা নামে দুই নারী নিহত হন। পরে মোরসালিন লাফ দিয়ে আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।