রংপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কর্মী নিহত, সাবেক এমপিসহ ৮ নেতা বহিষ্কার

রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহতসহ অন্তত ১৫ জন আহতের ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে বিএনপি ও যুবদলের আট নেতাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির ছয় নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন- বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক এবং সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক এবং বিষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত আরেক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বদরগঞ্জ পৌর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার ও যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক কয়েলকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার বদরগঞ্জে ভাড়াটিয়া ও দোকান মালিকের দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লাভলু মিয়া নামে এক বিএনপিকর্মী নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয় অন্তত ১৫ জন। এ সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির তিন নেতার বিরুদ্ধে দখলদারিত্বের অভিযোগ এনে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয় রংপুর জেলা বিএনপি। তিন নেতা হলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক এবং উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক।
এদিকে, মরদেহ দাফন শেষে রোববার সন্ধ্যার পর বিএনপিকর্মী লাভলু মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রতিবাদে বদরগঞ্জ পৌরশহরে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিকের নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, তার ছেলে তমাল ও বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান মানিককে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান রোববার রাত ১১টার দিকে জানান, এ বিষয়ে এখনও মামলা হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।