রংপুরে ৩টিতে আ.লীগ, ১টিতে জাপা ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর:
রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনেই তিনটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে জাতীয় পার্টি এবং দুটি আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন। ছয় বিজয়ীর মধ্যে এবারই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী, তারা দুজন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান ছয়টি আসনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন।রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া-আংশিক সিটি) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু কেটলি প্রতীকে ৭৩ হাজার ৯২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩২ ভোট। এছাড়া লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৯২ ভোট। এই আসনে ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেন।
রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কামাল মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক নৌকা প্রতীকে ৮১ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ সরকার বিটু ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫৮৩ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য আনিছুল ইসলাম মণ্ডল ২৪ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নেন।
রংপুর-৩ (সদর-সিটি কর্পোরেশন) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ৮১ হাজার ৮৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃতীয় লিঙ্গের আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী (ঈগল) পেয়েছেন ২৩ হাজার ৩২৬ ভোট। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মশাল প্রতীকে সহিদুল ইসলাম ২ হাজার ৩১৮ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে ৬ জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেন।
রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে নৌকা প্রতীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি ১ লাখ ২১ হাজার ৬২২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৪১ হাজার ৬৭১ ভোট। এছাড়াও বাংলাদেশ কংগ্রেসের সিরাজুল ইসলাম ডাব প্রতীকে ১হাজার ১৯৫ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নেন।
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার ট্রাক প্রতীকে ১ লাখ ৯ হাজার ৭০৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত রাশেক রহমান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৯০ ভোট। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আনিছুর রহমান পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৩৪ ভোট। এই আসনে ৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন।
রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ১ লাখ ৮ হাজার ৬৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৮৩২ ভোট। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুর আলম মিয়া যাদু লাঙ্গল প্রতীকে ৯ হাজার ১৬ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে ৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর সিটি কর্পোরেশন ও ৮টি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলার ৬টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৫০৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১২ লাখ ২০ হাজার ৩৯৪ জন। পুরুষ ১২ লাখ ১২ হাজার ৮৭ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ২৪ জন ভোটার রয়েছে। জেলার মোট ৮৫৮টি ভোটকেন্দ্রের ৫ হাজার ১৭৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।