চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের রাউজানে দুই ছাত্রদল নেতাকে অপহরণ করে নির্যাতন করে মৃত ভেবে নদীর চরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় বিএনপির ১৬ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অপহরণ, চাঁদা দাবি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করেন হামলার শিকার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীনের বাবা মুহাম্মদ শওকত আলী। ভিকটিম দুই ছাত্রদল নেতা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী।
মামলার আসামিরা হলেন- বিএনপি নেতা মুহাম্মদ হাবিব (৪৭), শাহ আলম (৩৫), মুহাম্মদ লোকমান (৪৩), আব্দুর রশিদ (৪৭), মুহাম্মদ জাহেদ (২৫), জানে আলম (৩৮), মুহাম্মদ সোহেল (৩৫), কামরুল হাসান (৫৮), মুহাম্মদ রাজু (২৮), পাভেলসহ ১৬ জন। আসামিদের সবাই কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাদের দলীয় কোনো পদ পদবি নেই। যদিও গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী দাবি করেছেন, হামলা, সংঘর্ষে তার কোনো কর্মী বা অনুসারী জড়িত নন। মামলার আসামিরাও ওই ঘটনায় দায়ী নয়।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, দুইজনের ওপর হামলার ঘটনায় একজনের বাবা বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে তার ছেলে মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন (৩২) ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন (৩০) স্থানীয় ইউপি কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল এসে দুজনকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। ওখান থেকে চৌধুরীঘাটে নিয়ে দুজনকে হকিস্টিক, লোহার রড ও লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করা হয়। তারা মারা গেছেন, ভেবে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কচুখাইন গ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীর মোহনায় থাকা মাঝের চরে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তার ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণ চেয়েছিল সন্ত্রাসীরা।
আহত জয়নালের বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিশপাড়া এবং সাজ্জাদের বাড়ি কচুখাইন গ্রামে। তারা দুজন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারী। রাজনৈতিক কারণে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে। দুজনই এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ পর্যন্ত নোয়াপাড়া ইউনিয়নে অন্তত পাঁচবার হামলা ও গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় জড়িত রয়েছেন বিএনপির দুই পক্ষ কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীরা।