রাজনীতি থেকে মাইনাস করতেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো মামলা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ওয়ান-ইলেভেনের রাজনৈতিক কুশিলবরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করতেই গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, মিথ্যা ও বানোয়াট এ মামলায় অব্যাহতি পাওয়ায় অত্যন্ত আনন্দিত।
প্রায় দেড় যুগ আগে তৎকালীন ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়ে করা বহুল আলোচিত গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিএনপি চেয়ারপারসনসহ দলটির শীর্ষ তিন নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। আলোচিত এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ১৭ বছর আগে মামলা হলেও এতদিনে আদালত অভিযোগ গঠন করতে পারেনি। যদি অভিযোগ গঠনের মতো কোনো উপাদান এখানে থাকতো তাহলে শেখ হাসিনা সরকার আগেই বিচার করতো। কারণ, তিনি খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছিলেন। তবে আইনানুগভাবে সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে আমাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিন গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। এরপর অভিযোগ গঠন শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন ভূইয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত শুনানি শেষে তিনজনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন। এছাড়া অন্য ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। অব্যাহতি পাওয়া অন্য দুজন হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বিচার শুরু হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আনছার, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌসচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন গ্যাটকো পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন ও বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। এতে আসামি করা হয় চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে।
মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এ মামলার আসামি ২৪ জনের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানসহ আটজন মারা গেছেন। এছাড়া জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় তাকেও মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।