নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাষ্ট্রপতির পদ ঘিরে অহেতুক বিতর্ক অনাকাঙ্ক্ষিত, এটি কাম্য নয়। গত দুই-তিন দিন রাষ্ট্রপতির এক অনানুষ্ঠানিক কথোপকথন দেশে হঠাৎ করে নানা ধরনের আলোচনা সৃষ্টি করেছে। সবাই বুঝতে পারছেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর এক কথোপকথন থেকে বিগত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রের বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পদত্যাগপত্রের হদিস কারও জানা নেই।
এই ছোট ঘটনা থেকে বিতাড়িত প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা-না থাকা; পদত্যাগপত্র নিয়ে প্রথমে রাষ্ট্রপতির একরকম কথা বলা এবং সর্বশেষ বিষয়টি ‘মীমাংসিত’ বলে রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে জানানো হয়। কিন্তু এ ঘটনা নিয়ে এখন নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যেমন– রাষ্ট্রপতি তাঁর পদে থাকার নৈতিক ও আইনি যোগ্যতা হারিয়েছেন কিনা; রাষ্ট্রপতির অবিলম্বে পদত্যাগেরও দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তিনি পদত্যাগ করলে বা তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হলে নতুন রাষ্ট্রপতি কীভাবে নিযুক্ত হবেন, সেসব প্রশ্ন আলোচনায় আসছে।
এটা অনস্বীকার্য যে, আমরা দেশ ও রাষ্ট্র হিসেবে সম্পূর্ণ নতুন পথে হাঁটছি। অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ইতোমধ্যে দু-একটি হোঁচট অবশ্যই খেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সংস্কার গতিশীল বলে মনে হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারের সাফল্য আমরা সবাই কামনা করছি। এমন সময় রাষ্ট্রপতির পদ নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি, ভুল বোঝাবুঝি, কল্পনা-গুজবের ডালপালা ছড়ানো– এসবের কোনোটাই দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে কোনো প্রক্রিয়ায় ছোটখাটো ভুলভ্রান্তি হয়েছে, তাহলেও এটা সবাইকে স্বীকার করতে হবে যে গণআন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান ও গণবিপ্লব অঙ্কের ফর্মুলার হিসাব অনুযায়ী চলে না। তাই প্রক্রিয়াগত দু-একটি ভুলভ্রান্তি হলেও সেটা উপেক্ষা করে মূল লক্ষ্য, অর্থাৎ রাষ্ট্রযন্ত্র সংস্কারের দিকেই নজর দিতে হবে। এবং কিছুটা স্থবির হয়ে যাওয়া অন্তর্র্বতী সরকারের গতি বাড়াতে আন্দোলনের সমন্বয়ক কিছু ছাত্রছাত্রীকে উপদেষ্টা পরিষদে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।