নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ রোববার (১৯ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশের পর প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন বলেন, নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর করা আপিল খারিজ করার ফলে এখন তারা রেস্টোরেশন বা রিভিউ আবেদন করতে পারবে। সেটি না করা পর্যন্ত আজকের আদেশ বহাল থাকবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত কয়েকবার সময় দিয়েছেন। আজ সকালেও তারা (জামায়াত) সময় চান। এরপর আদালত ওই আইনজীবীকে (জামায়াতের আইনজীবীর পক্ষে থাকা আইনজীবী) বলেন, সাড়ে ১১টার সময় আসুন। রেডি হয়ে আসুন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবারও সময় চাইলে আদালত আবেদন খারিজ করে দেন। তাদের আইনজীবীও ছিলেন না, অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডও ছিলেন না। যিনি ছিলেন তিনি হলেন মূল আইনজীবীর পক্ষের আইনজীবী।
জামায়াতের কর্মসূচি পালন নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইনটি কেন হলো। আমাদের সবাই রাজনীতি করতে পারবে। রাজনীতি করতে হলে নিবন্ধনটা নিতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাজ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে নিবন্ধনের সঙ্গে যে আরপিও আইন রয়েছে, তা দেখে তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না, সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতির জন্য নিবন্ধন করতে হয়। সেটা এখন বাতিল। অর্থাৎ তারা এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল না। নিবন্ধিত দল ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে কী করণীয়, ডিএমপি অ্যাক্ট বা রেগুলেশন দেখে তারা সিদ্ধান্ত নেবে।
জামায়াতের পরবর্তী আইনি সুযোগ সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা রেস্টোরেশন বা রিভিউ আবেদন করতে পারেন। সেটি না করা পর্যন্ত আজকের আদেশ বহাল থাকবে।
এর আগে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর করা (লিভ টু আপিল) আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রোববার (১৯ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় জামায়াতে আপিল খারিজ (ডিসমিসড ফর ডিফল্ট) করে আদেশ দেন। এর ফলে নিবন্ধন অবৈধ করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ রোববার আপিলটি শুনানির জন্য উঠলে জামায়াতের পক্ষে নিয়োজিত সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য ছয় সপ্তাহ সময়ের আবেদন করেন আইনজীবী মো. জিয়াউর রহমান। তবে বার বার সময় আবেদন করায় আদালত তা নাকচ করে লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন।
এ সময় রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমির আদালত অবমাননার আবেদন শুনানির আর্জি জানান। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালত অবমাননা কিসের? হাইকোর্টে যান। সেখানে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এখানে আপিল আছে, আমরা আপিল নিষ্পত্তি করবো। এরপর আদালত আপিল খারিজ করে আদেশ দেন।