রেললাইন কাটা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো-এ কোন রাজনীতি : প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
নিজস্ব প্রতিনিধি:
রেললাইন কাটা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো -এ কোন রাজনীতি প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি আজ দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, ‘মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুরে ট্রেন লাইনের ২০ ফুট কেটে দেওয়া হয়েছে এবং এতে ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে, একজন যাত্রী নিহত হয়েছেন, অর্ধ শতাধিকের বেশি যাত্রী আহত হয়েছেন, ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। রাজধানীতেও কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। তাদের এই তথাকথিত অবরোধ শুরু হওয়ার পর দেশের কোথাও অবরোধ পালিত হয়নি। কিন্তু এ পর্যন্ত সাড়ে ৩শ’ যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে,৭ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং বহু মানুষ আগুনে দগ্ধ হয়েছে। এই ট্রেন লাইন কাটা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো এ কোন রাজনীতি? এই অপরাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা সবাই যদি এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি তাহলে এই অপরাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গুপ্তস্থান থেকে প্রতিদিন প্রেস ব্রিফিং করেন, মাঝে মধ্যে হঠাৎ ভোররাতে বা মধ্যরাতে তাকে রাস্তাতেও দেখা যায়। আচমকা ১০ কিম্বা ৫ মিনিটের জন্য মিছিল করে আবার হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতারা যেরকম করেন, ঠিক ওরকমই তারা করছেন। মানুষ ও গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো, সন্ত্রাস নৈরাজ্য সৃষ্টি কখনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়। এগুলো সন্ত্রাসী দেশবিরোধী জনবিরোধী কর্মকান্ড। তাদের কর্মকান্ডের বর্বরতা, হিং¯্র্রতা, নৃশংসতা হিংস্ত্র হায়েনাকেও হার মানিয়েছে। তারা হিং¯্র জন্তুর চেয়েও জঘন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের এই অপরাজনীতি চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
সন্ত্রাসীদের বিচার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অনেকে মনে করছেন, যারা ট্রেন লাইন কেটেছে পুলিশ তাদের খুঁজে পাবে না, কিন্তু পুলিশ অবশ্যই তাদেরকে খুঁজে বের করবে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অবরোধের ডাককে মানুষ বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, দেশে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি অর্থাৎ বেশিরভাগ দলই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দেশ এখন নির্বাচনী উৎসবমুখর। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করতে ক্রমাগতভাবে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে গুপ্তস্থান হতে অবরোধের ডাক দেওয়া হচ্ছে। দেশের মানুষ তো এতে সাড়া দেয়ইনি বরং তাদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। সেই জনজীবনকে ব্যাহত করার জন্য ক্রমাগতভাবে ২৮ অক্টোবর থেকে গাড়ি-ঘোড়ায় আগুন দেওয়া হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের লোকজন অপরাধ করেছে, এ জন্য নিজেরাই গা ঢাকা দিয়েছে। সরকার বা আওয়ামী লীগ বলে নাই যে, আপনারা গর্তের মধ্যে ঢুকে যান। যারা অপরাধ করে তারাই গা ঢাকা দেয়।’
জাতীয় পার্টির সাথে আলোচনা প্রশ্নে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পার্টির মহাসচিব ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন, তারা নির্বাচন করার জন্যই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আমিও বিশ্বাস করি, তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভালো ফল করবেন। জাতীয় পার্টি আমাদের দীর্ঘদিনের সহযোগী, গণতন্ত্র ও সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য তারা আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আজকের পরিস্থিতিতেও জাতীয় পার্টি আগের মতোই আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে।’
সাংবাদিকদের মন্তব্য ‘বিএনপির সমমনা কিছু ছোট দল নির্বাচন বিরোধী উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে’ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন ব্যাঙ অনেক ছোট কিন্তু ব্যাঙের আওয়াজ অনেক বড়। আমাদের রাজনীতিতেও কিছু দল আছে ব্যাঙ যেমন ছোট সে রকম, কিন্তু আওয়াজ অনেক বড়। এরা নানা ধরণের কথা বলে।’