ডেস্ক রিপোর্ট:
জাতিসংঘ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত রয়েছে রোহিঙ্গা প্রস্তাব। বুধবার (১৫ নভেম্বর) মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার নিয়ে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবটি গৃহিত হয়। যৌথভাবে এই প্রস্তাব দিয়েছিল ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
মিয়ানমারে যুগ যুগ ধরে নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছিল রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের বাঙালি আখ্যা দিয়ে খুন, ধর্ষণসহ নানারকম অত্যাচার চালায় মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী। ২০১৭ সালে বড় আকারের সামরিক অভিযান শুরু করলে পাশ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এরপর ৬ বছরের বেশি সময় ধরে তাদের মানবিক আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বরাবরই সরব ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। তবে এবারই সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সমর্থন মিলল। ওআইসি ও ইইউয়ের এই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে ১১৪টি দেশ।
প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকারের উদারতা ও মানবিক সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করে দেশটির সরকারকে রোহিঙ্গা সংকটের মূল খুঁজে বের করার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ নিশ্চিতের কথাও বলা হয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবকেও স্বাগত জানানো হয়েছে। সেখানে মিয়ানমারে সব ধরনের সহিংসতা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছিল। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, প্রস্তাবে সাধারণ পরিষদের সদস্যদের মিয়ানমারে সব ধরনের সহিংসতার অবসানের দাবি জানাতে বলা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐক্যমতের দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, সব সদস্য দেশকে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে এবং বাংলাদেশের ওপর আসা চাপকে ভাগ করে নিতে হবে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধ বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ছোট আয়তনের জনবহুল দেশ। আমাদের সম্পদও কম। রোহিঙ্গাদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দেওয়া সুযোগ নেই আমাদের। তাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।’
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি। বক্তব্যে তিনি আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।