শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা ডিপোজিট করে দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

ওয়ার্কশপে হাত বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে তিন বছর আগে হাত হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছর বয়সী শিশু নাঈম হাসানকে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আইনজীবীরা জানান, ওয়ার্কসপে কাজ করতে গিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন স্কুলছাত্র নাঈম হাসান নাহিদের পড়ালেখা বাবদ এইচএসসি পর্যন্ত প্রতি মাসে ৭ হাজার করে টাকা তার স্কুল অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে এবং দুই কিস্তিতে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এদিন আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও অ্যাডভোকেট মো. বাকির উদ্দিন ভূইয়া। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী তামজিদ হাসান। তারা বিনাপয়সায় শিশুটির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন। ওয়ার্কশপ মালিকের পক্ষে ছিলেন সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

ব্যারিস্টার অনিক আর হক সাংবাদিকদের জানান, শিশু নাঈম হাসানকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে ওয়ার্কশপের মালিককে ১৫ লাখ টাকা এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আরও ১৫ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে বলেছেন আদালত। নাঈম হাসান ১০ বছর পর ডিপোজিটের টাকা উত্তোলন করতে পারবে। একই সঙ্গে শিশুটি এইচএসসি পাস না করা পর্যন্ত তাকে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। কিশোরগঞ্জের ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক ইকবালকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকার নুর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় শিশু নাঈমের ডান হাত মেশিনে ঢুকে যায়। এরপর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় তার হাত।

নাঈমের বাবার অভিযোগ, ঘটনার দিন ওয়ার্কশপের ম্যানেজার রাজু আহমেদ তার ছেলেকে জোর করে মেশিন চালাতে দিলে এমন দুর্ঘটনা ঘটে। পরে ১০ অক্টোবর নাঈমের চাচা ওয়ার্কশপ মালিক ও ম্যানেজারসহ পাঁচজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ওয়ার্কশপের মালিক ইয়াকুব হোসেন, ওয়ার্কশপের মিস্ত্রি স্বপন মিয়া, জুম্মান মিয়া, সোহাগ মিয়া ও ব্যবস্থাপক রাজু মিয়াকে আসামি করা হয়।

২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর নাঈমের বাবা দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করেন। এরপর চলতি বছরের গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শিশু নাঈমের এক হাত হারানোর ঘটনায় তাকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না সেই মর্মে জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।ো