শীতার্তদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টায় ‘বাংলাদেশ ইয়্যুথ অর্গানাইজেশন’

প্রকাশিত: ১২:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২৫

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

সারা দেশে মাঘের হাড়-কাঁপানো শীত নেমেছে। শৈত্যপ্রবাহ তো আছেই। উত্তরের জনপদ গাইবান্ধার তাপমাত্রাও কমেছে বেশ ভালোই। নানা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাই এ অঞ্চলের মানুষদের নিয়তি। গ্রীষ্মে পিঠফাঁটা গরম। বর্ষায় নদী ভাঙন। আর শীত বেলায় তো চরম অসহায়ত্ব।

অন্য মৌসুমে মানিয়ে নিতে পারলেও শীতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগই জানে এই এলাকার মানুষেরা। কনকনে শীতে ঠকঠক করে কাঁপা মানুষের গায়ে শীতবস্ত্র জড়িয়ে তার মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। এমন চিন্তা থেকেই কনকনে ঠান্ডায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন একদল তরুণ।

গাইবান্ধার তরুণদের পরিচালিত সংগঠন বাংলাদেশ ইয়্যুথ অর্গানাইজেশন। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তারা বাড়িয়ে দিয়েছেন সহযোগিতার হাত। অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নিরন্তর ছুটে চলেছেন তারা।

‘সাহায্য নয়, উপহার–উষ্ণতা হোক সবার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) জেলার তুলসীঘাট হেলি-প্যাডে অসহায় শীতার্ত মানুষদের শীতবস্ত্র উপহার দেয়।

কম্বল নিতে এসে শীতে কাঁপছিলেন বিধবা জরিনা। গত বর্ষায় ঘরের একপাশের চালা খুলে যায়। অর্থের অভাবে এখনো তা সারাতে পারেননি। এই শীতে ভীষণ কষ্ট তার। একটা কাঁথা আর কম্বল গায়ে দিয়ে রাত কাটাতে হয়। এবারের কম্বল পেয়ে বেশ খুশি ছিলেন জরিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘যে ঠান্ডা পচ্চে, আর হামার ঘর দিয়া যে বাতাস ঢোকে, ওটি মানুষ থাকা যায় না বাবা। আজা এই কম্বলটা দিয়া এনা শান্তি করি ঘুমাসিম’।

মনোয়ারা বেওয়া নামের এক নারী জানান, অনেকের কাছে কম্বল চেয়েও পাওয়া যায়নি। আজ অনেকগুলো ছেলে-মেয়ে তাকে ডেকে একটা কম্বল দেয়। এই শীতে অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি।

শুধু জরিনা, মনোয়ারা নয় এই শীতে উষ্ণতা ভাগাভাগি করতে এখন পর্যন্ত এমন ১৫০ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ ইয়্যুথ অর্গানাইজেশন।

বাংলাদেশ ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জিহাদ আকন্দ বলেন, ‘শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ ইয়্যুথ অর্গানাইজেশন ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের মুখে হাসি ফোটানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। এভাবে অসহায়দের সাহায্যে এগিয়ে আসার মাধ্যমেই রচিত হবে মানবিক সেতুবন্ধন। আমাদের সামান্য সহযোগিতা তাদের জীবনে এনে দিতে পারে এক টুকরো সুখ। আপনারা সবাই আমাদের সঙ্গে থাকুন এই মানবিক যাত্রায়।’

সংগঠনের সহ-সভাপতি মাহফুজুল হক সিহাব বলেন, ‘একটি পুরনো কিংবা নতুন শীতবস্ত্র একজন শীতার্ত মানুষের শীত নিবারণের অবলম্বন হতে পারে।সমাজের অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো সকলেরই নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের উপার্জিত অর্থের সামান্য পরিমাণও যদি এ সকল অসহায়দের জন্য আমরা বরাদ্দ করি তাহলে বিন্দু বিন্দু সে দান শীতার্তদের কষ্ট লাঘবে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারে।’

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর লুম্পা সরকার, ভলান্টিয়ার কোঅর্ডিনেটর গীতা বিশ্বাস, হেলথ কোঅর্ডিনেটর রিয়া মনি, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. নাহিদুল ইসলাম, মাহামুদুল হক সিয়াম, মো. আসিফ মিয়াসহ আরও অনেকে