শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর টাইগারদের বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
ক্রীড়া ডেস্কঃ
গেল বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে আশানুরূপ ফলাফল আনতে পারেনি বাংলাদেশ। মুখ থুবরে পড়েছিল আসরটিতে। ধারাবাহিক ব্যাটিং ব্যর্থতা এবং দলীয় পারফরম্যান্সের অভাবে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছিল। তবে এরপর সেই ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ফরম্যাটে জয় এবং পরবর্তীতে তাদের দেশে গিয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে খানিকটা ছন্দে ফিরেছে টাইগাররা।
এবার দলের সামনে লক্ষ্য চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে ঘিরে। আর এই আসরের পরিকল্পনা করবে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিপিএল এবং পরবর্তীতে ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কা সিরিজের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে। গতকাল এমনটি জানিয়েছেন টাইগার প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু।
শনিবার অলিম্পিক ভবনে বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের মিডিয়া কাপ ক্রিকেট-২০২৪ টুর্নামেন্টের ড্র অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুইটা টুর্নামেন্ট (আসন্ন বিপিএল এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) আলাদা। এখানে অনেক কিছু… তো বিপিএলটা আগে শেষ হোক এরপর আরেকটা সিরিজ আছে ঐটার পর বিশ্বকাপের পরিকল্পনা শুরু হবে। সেই হিসেবে আমাদের বিসিবির সবার গুরুত্ব থাকবে আসরটি (বিপিএল) দেখার। এখানে কিছু দুর্দান্ত পারফর্মার যদি পাওয়া যায় এটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট ভালো। এবং সবার পারফরম্যান্সই মনিটরিং করা হবে। আশা করি, বেশ কিছু ভালো পারফর্মার এখান থেকে পাওয়া যাবে।’
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে বিপিএলেও করা হচ্ছে ব্যাটিং বান্ধব উইকেট। গেল কয়েক দিন ধরে এই বিষয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। তাই এদিন নির্বাচকের কাছেও জানতে চাওয়া হয় বিপিএলের উইকেট নিয়ে। জবাবে তিনি বলেন, ‘উত্তেজনাপূর্ণ ক্রিকেট খেলা গুরুত্বপূর্ণ। দলগুলোর জন্য সব সময় চ্যালেঞ্জিং থাকে, আবহাওয়ার কন্ডিশনও এখন একটু পরিবর্তন রয়েছে। এখানে অনেক কুয়াশা হয় রাতে। তো সব কিছু মিলিয়ে আমরা চাইবো দিন শেষে দলগুলোর পারফরম্যান্স যাতে ভালো থাকে এবং ক্রিকেটে আগাম কিছু বলা কষ্টকর কী ধরনের পারফরম্যান্স হবে। তবে আমরা ভালো ক্রিকেট দেখার অপেক্ষায় আছি।’
এসময় প্রতিটা ভেন্যুর উইকেট ভিন্ন হওয়ার আভাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনটা ভেন্যুতে (ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম) কিন্তু আপনি একই ধরনের উইকেট চিন্তা করতে পারেন না। একেক জায়গায় একেক ধরনের পরিকল্পনা থাকে। সেই হিসেবে গতবারের বিপিএলের উইকেট কিন্তু মানসম্পন্ন ছিল এবং এবারও আমরা আশা করছি, তিনটি ভেন্যুতে যথেষ্ট ভালো উইকেট হবে ও আমাদের ক্রিকেটাররা যখনই সুযোগ পাবে, ভালো খেলার সুযোগটা পাবে।’
এর আগের বিপিএলের আসরগুলো ফ্রাঞ্চাইজিগুলো বিদেশি কোচ এনে দলগুলোকে প্রস্তুত করত। তবে গত আসর থেকে বিদেশি কোচদের আনার বিষয়ে কম আগ্রহ দেখা দিয়েছে দলগুলোর মধ্যে। আর এবার তো পুরোই বদলে গিয়েছে। আসরে থাকবে দেশি কোচদের জয়জয়কার। টুর্নামেন্টের সাত দলের মধ্যে ছয় দলকেই এবার সামলাবেন দেশি কোচ। যা কিনা এবারই প্রথম। এই বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন প্রধান নির্বাচকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, লোকাল কোচরা এখন প্রতিটা দলের দায়িত্ব পেয়েছে এটা আমাদের জন্য একটা ভালো দিক। এবং ওদের পারফরম্যান্সটাও মনিটরিং করা হবে। আশা করছি, সবাই যার যার দায়িত্বটুকু ভালোভাবে পালন করতে পারবেন।’
এদিকে আইসিসির চলতি বছরের সূচি অনুযায়ী টাইগারদের বেশ ব্যস্ত সময় পার করতে হবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও বিপিএল ছাড়াই সাত দলের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে মাঠে নামবে। এ সময় তিন ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ৪০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বলতে গেলে দম ফেলারও সুযোগ নেই। এতে করে খেলোয়াড়দের ইনজুরি হওয়ার বেশ শঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে দলের পেস বোলারদের।
তবে প্রধান নির্বাচকের মতে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় রয়েছে। চোটে কেউ মাঠের বাইরে থাকলেও মানসম্পন্ন দল সাজাতে কোনোরকম সমস্যা হবে না। বলেন, ‘এখন সারা পৃথিবীতে ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচ হচ্ছে। এখানে খেলোয়াড়দের মানসিক ভাবে তৈরি করাটা গুরুত্বপূর্ণ সেই হিসেবে আমি মনে করি, আমাদের খেলোয়াড়রা এখন যথেষ্ট পরিমাণে পরিপক্ক, যথেষ্ট অভিজ্ঞসম্পন্ন তিন ফরম্যাটে ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য। তো আমি আশা করছি…. অবশ্যই বাড়তি খেলোয়াড় রাখবে। কারণ ব্যাক টু ব্যাক খেলা ইনজুরির চিন্তাভাবনা থাকে মাথায়, পারফরম্যান্সের চিন্তা করতে হয়। তো আমাদের খেলোয়াড়দের সংকট হবে না। আশা করি, তিন ফরম্যাটের জন্যই স্ট্যান্ডার্ড স্কোয়াড তৈরি করতে পারব।’