হাবিবা ইসলাম
ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় আজ সকালে বৃষ্টি হয়েছে। এরপরও আজ রোববার বিপদসীমায় রাজধানীর বায়ু।আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আজ সকাল ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত ঢাকায় ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে সাধারণত নগরীর বায়ুদূষণের মাত্রা কম থাকে।
আজ রোববার ১২টা ২৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেকক্সে (একিউআই-বায়ুর মান সূচক) স্কোর ছিল ১০২, যা বিপদসীমায় রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়। এই স্কোর বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় ২০তম স্থান।
বিশ্বের ১০০টি দেশের মধ্যে বায়ু দূষণের এ তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, স্কোর ১৮৫। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ, স্কোর ১৭৫। ১৬৫ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। চতুর্থ স্থানে থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই, স্কোর ১৫৭। পঞ্চম স্থানে রয়েছে চীনের হেংঝু, স্কোর ১৫৫।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে দুই দশমিক পাঁচ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ‘ভালো’ বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে ‘মধ্যম’ মানের ও ১০১-১৫০ হলে ‘বিপদসীমায়’ আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১-৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ ও ৩০১-৫০০ হলে ‘বিপজ্জনক’ বলা হয়।
বায়ু দূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুসারে, বিশ্বে বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যান।