রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হলে সহপাঠীদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারান ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) শিক্ষার্থী জুবায়ের রহমান সাকিব। তার স্বজনরা বলছেন, এটা শহীদি মৃত্যু। রোববার সকালে সাকিবের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর মুরারীপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। একমাত্র ছেলের জানাজা পড়িয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। অন্যদিকে ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা।
সাকিবের মৃত্যুর খবর পেয়ে ময়মনসিংহ ছুটে যান বাবা জাহাঙ্গীর আলম ও মা ফজিলাতুন্নেছা সেফা। শনিবার রাত ১১টায় ছেলের মরদেহ ফ্রিজার ভ্যানে করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাজশাহীতে নিয়ে আসেন তারা। আজ সকাল ৭টায় নগরীর ডিঙ্গাডোবায় সাকিবের প্রথম জানাজা হয়। এর পর সকাল ১০টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় পবার মুরারিপুরে। এতে অংশ নেন সহপাঠী, স্বজনসহ গ্রামের হাজারো মানুষ। নামাজের ইমামতি করেন তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম।
এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছেলে হারিয়ে তার মা ভেঙে পড়েছেন। খাওয়া-দাওয়া ছেড়েছেন। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। তবে আল্লাহ আমাকে সহ্য ক্ষমতা দিয়েছেন। তাই কথা বলতে পারছি। তিনি আরও বলেন, সাকিব খুবই ভালো ছেলে ছিল। তাকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। সবাই দোয়া করবেন।
সাকিবের স্বজন রহিদুল ইসলাম বলেন, একটি বাস বিদ্যুৎতায়িত হলে সাকিব নিজের বাস থেকে নেমে গিয়েছিলেন তার সহপাঠীদের জীবন বাঁচাতে। অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে যে মারা যায় সেটা শহীদি মৃত্যু। সাকিব শহীদি মৃত্যু বরন করেছেন। তবে তার মতো তরতাজা একটি প্রাণ অকালে চলে গেল, এটা মানা যায় না।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় যাদের অবহেলা আছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পিকনিক ডাবল ডেকার বাসে কেন যাবে? এমন সরু রাস্তায় এই বাসে যাওয়ার অর্থই হলো এতে অবহেলা রয়েছে।
সাকিবের চাচাতো ভাই রাকিবুল হাসান বলেন, বাবা-মা ও দুই ভাই-বোনের সুখী একটি পরিবার ছিল। সাকিবের বড় বোন মেডিকেল কলেজে পড়েন। সাকিব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছিলেন। অনেক স্বপ্ন ছিল। সাকিবের মৃত্যুতে সব স্বপ্ন ধুলোয় মিশে গেল। একটি দুর্ঘটনায় সুখী একটি পরিবার চিরদিনের জন্য অসুখী হয়ে গেল।