সাগর-রুনি হত্যা মামলার অনেক নথি পুড়ে গেছে : হাইকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষ

প্রকাশিত: ১২:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আরশাদুর রউফ হাইকোর্টে বলেছেন, ৫ আগস্টে ডিবি অফিসে আগুন দেওয়া হয়। তখন অনেক রেকর্ড পুড়ে গেছে
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চে তিনি একথা জানান। তবে তদন্তের গোপনীয়তার স্বার্থে অগ্রগতি আদালতে উপস্থাপন করেন তিনি।

এসময় আরশাদুর রউফ তদন্ত সম্পন্নে নয় মাস সময় চান। তিনি আদালতে বলেন, তদন্তের অগ্রগতি হয়েছে। আরও সময় দরকার। পরে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে আরও ৬ মাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির।এর আগে গত ২৩ অক্টোবর হাইকোর্টের নির্দেশে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে পিবিআই প্রধানকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার নিচে নয় পুলিশের একজন প্রতিনিধি, সিআইডির একজন প্রতিনিধি ও র‌্যাবের একজন প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।

গত ১৭ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্তে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তাদেরকে ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বিভিন্ন বাহিনীর অভিজ্ঞ তদন্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে বলা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। মামলার বাদীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ শুনানি করেন।

এর আগে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত থেকে র‌্যাবকে সরিয়ে দিতে সম্পূরক আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ আবেদন করা হয়।

২৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নতুন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশিষ্ট ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনিরকে আলোচিত এ মামলার আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রোববার সাগর-রুনি হত্যা মামলার বাদী নওশের রোমান বলেন, এখন থেকে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাগর-রুনি হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনে আইনি লড়াই করবেন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আমরা সাগর-রুনি হত্যার রহস্য উন্মোচনে কাজ শুরু করব। এর অংশ হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে খুবই দ্রুত মিটিং করব। একইসঙ্গে হত্যার রহস্য উন্মোচনে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করব।

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ পর্যন্ত ১১৩ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন।