
সানজিদা মাহবুবা:
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ দাবিতে আজ (২৩ এপ্রিল) দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচি থেকে এই ঘোষণা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। কর্মসূচিতে বুয়েট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), কুয়েট, ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মুসাদ্দিক বলেন, আজ দেশের কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে যাবে না। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের মাধ্যমে কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে হবে। প্রতিটি ক্যাম্পাসে প্রতীকী অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যে এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।
এর আগে রাত সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা ‘এক দুই তিন চার, মাসুদ তুই গদি ছাড়’, ‘গোলামী না আজাদী, আজাদী আজাদী’, ‘আমার ভাই অনশনে, ইন্টেরিম কি করে’, ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস একসাথে চলে না’—এইসব স্লোগানে মুখর করে তোলে রাজপথ। টানা এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট শাহবাগ অবরোধের পর রাত ১২টা ১৫ মিনিটে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন তারা।
এ সময় কুয়েট শিক্ষার্থী সৈকত বলেন, যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও অনশনে বসবেন। এই আন্দোলন স্বৈরাচারদের জন্য একটি বার্তা হয়ে থাকবে। আমরা চাই, ‘জুলাইয়ের স্পিরিট’ বজায় থাকুক—কুয়েট একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠুক।
বুয়েটের শিক্ষার্থী আব্দুন নুর তুষার বলেন, কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ৩৬ ঘণ্টা ধরে অনশনে আছেন। আমরা এখন ক্লাসে গিয়ে বসতে পারি না। আজ প্রতিটি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি হোক। অন্তর্র্বতী সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক।
চুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, এত শিক্ষার্থী আন্দোলনে নেমেছে, অথচ এখনো কুয়েট প্রশাসন কিংবা অন্তর্র্বতী সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জবির এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার ভাইবোনরা যখন অনশনে, তখন কুয়েটের দালাল ভিসি বলছেন, আমরা আলোচনা চাই। আমাদের এক দফা—তার পদত্যাগ।
এদিকে, কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একদল নেতাকর্মী। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের অনশন চলমান।