হজরে ভাড়া নর্ধিারণে স্বতন্ত্র কমটিি চায় হাব

প্রকাশিত: ৯:২১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৩

মনির হোসেন:

এ বছর হজের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার ৮শ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কম। তবে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) দাবি— এ ভাড়া অযৌক্তিক। কোনোভাবেই হজ যাত্রীদের বিমান ভাড়া এক লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হতে পারে না। একইসঙ্গে হজের বিমান ভাড়া নির্ধারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একক কর্তৃত্বের বদলে ‘স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি’ গঠনের দাবি জানিয়েছে হাব। এসব দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর আবেদন করেছে হাব।

উল্লেখ্য, ২ নভেম্বর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সাধারণ প্যাকেজ মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। এ বছর সরকারিভাবে বিশেষ প্যাকেজসহ দু’টি প্যাকেজ করা হয়েছে। বিশেষ প্যাকেজে হজে যেতে লাগবে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। আগামী বছরের ১ মার্চ থেকে হজ ভিসা ইস্যু এবং ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এদের মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ১৭ হাজার জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সালের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

হাব বলছে, এ বছরের বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৪ হাজার ৮শ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত ভাড়া বিগত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কম হলেও বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় আরও কমানো সম্ভব। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি। বর্তমানে এয়ারলাইন্সগুলো প্রায় ৭৫ হাজার টাকায় ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রিটার্ন টিকিট বিক্রি করছে এবং প্রায় ২০ শতাংশ আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। হজের সময় প্রায় শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট যায়। তাছাড়া খালি ফিরতি ফ্লাইটের পরিচালনা ব্যয়ও কম। সাধারণ ফ্লাইটের বিপনন ও সিস্টেম পরিচালনায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়, যা হজের ফ্লাইটে করতে হয় না। সে হিসেবে ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটের ভাড়া সর্বোচ্চ এক লাখ ৫০ হাজারের বেশি হতে পারে না।

এদিকে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া পুনর্র্নিধারণের দাবি জানিয়েছে হাব। বিগত কয়েক বছর ধরেই হাব হজের বিমান ভাড়া ‘স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি’ গঠন করে নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছে। গত বছরও এ দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল হাব। এবারও ৫ নভেম্বর একই দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন হাব সভাপতি এম. শাহাদাত হোসাইন তসলিম।

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা হাবের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি দিক নির্দেশনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা সৌদি সরকারের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। হজযাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে সামগ্রিক হজ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রী অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি। বর্তমান প্রেক্ষিত বিবেচনায় একটি ‘স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি’র মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনর্র্নিধারণের বিষয়ে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’’

হাব সভাপতি এম.শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘বিমান প্রতি বছর ভাড়া প্রস্তাব করে, তাদের প্রস্তাবিত ভাড়াই নির্ধারণ করা হয়। একটি প্রতিষ্ঠানের নির্ধারণ করা ভাড়া কখনোই এককভাবে নির্ধারণ করা যুক্তিপূর্ণ নয়। একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির গঠন করে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া পুনর্র্নিধারণের বিষয়ে হাবের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।’