৪৬ দেশে খাদ্যশস্য খেকো পোঁকা পঙ্গপালের হানা
চরম খাদ্য সঙ্কটের শঙ্কা
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
খাদ্যশস্য খেকো পোঁকা পঙ্গপালের হানায় বিপর্যস্ত কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়াসহ আফ্রিকার ১৪টি দেশ। এরপর পঙ্গপালরা ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ৩০টি দেশে। ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ভারত-পাকিস্তানেও।
পঙ্গপালেরা একদিনেই সাবাড় করে দিচ্ছে ৩৫ হাজার মানুষের প্রয়োজনীয় খাবার। মুহূর্তেই ধ্বংস করে ফেলছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ফলে গোটা পৃথিবীতেই চরম খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতি স্কয়ার কিলোমিটার পঙ্গপালের ঝাঁকে থাকে ৪ থেকে ৮ কোটি পোঁকা। জাতিসংঘের আশঙ্কা, আগামী জুনে এর বিস্তার অন্তত ৫০০ গুণ বৃদ্ধি পাবে। যেটি পৃথিবীজুড়ে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
এরইমধ্যে জরুরি অবস্থা জারিসহ ৭৩০ কোটি রুপির একটি কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ফসলি জমির ওপর হানা দিয়েছে পঙ্গপালের ঝাঁক। দেশটির সীমান্তে এর প্রকোপ বাড়তে থাকায় মুক্তি নেই ভারতেরও। এরইমধ্যে গুজরাটসহ ভারতের প্রায় ৪ লাখ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আফ্রিকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০০ গুণ বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে পঙ্গপালের বংশ বিস্তার দ্রুত বেড়েছে। যা গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। পঙ্গপালের বিস্তারের জন্য পরিবেশ বিপর্যয়কে দায়ী করছে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা-এফএও। বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জলবায়ু বিপজ্জনকভাবে পরিবর্তনের ফলেই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে এসেছে।
বিপর্যয় মোকাবিলায় ৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে এফএও। এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার তারা সংগ্রহ করতে পেরেছে। পঙ্গপালের দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে পৃথিবীর ১০ ভাগ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
একেকটি পতঙ্গ প্রতিদিন তাদের নিজেদের ওজনের সমপরিমাণ খাবার খেতে পারে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক বিশেষজ্ঞের মতে, ম্যানহাটনের আকৃতির পঙ্গপালের একটি ঝড় গোটা নিউইয়র্কের জনসংখ্যার প্রয়োজনীয় খাবার সাবাড় করতে পারে।
মরু পতঙ্গরা আবার ঝাঁক ধরে উড়ে। কেনিয়ায় এমন একটি পঙ্গপাল দৈর্ঘ্যে ৩৭ মাইল আর প্রস্থে ২৫ মাইলের আকার নিয়েছে। যেখানে যাচ্ছে সেখানে রীতিমত সূর্যের আলো তারা ঢেকে ফেলতে পারে।
পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণের সহজ কোনো উপায় নেই। উড়োজাহাজে, গাড়িতে করে কিংবা বহনযোগ্য যন্ত্রের সাহায্যে কীটনাশক ছিটিয়ে সাধারণত এদের দমন করা হয়। সমস্যা হল এতে উপকারী কীটপতঙ্গও মারা পড়ে।