৫ বছরে ১ কোটি বেকারের কর্মসংস্থান করবে আওয়ামী লীগ: কাদের
নিউজ পোস্ট বিডি নিউজ পোস্ট বিডি
নিউজ পোস্ট বিডি
জাহাঙ্গীর আলম মিয়া:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ৫ বছরে ১ কোটি বেকারের কর্মসংস্থান করবে আওয়ামী লীগ সরকার। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এক কোটি তরুণের জন্য ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নতুন বছরের উপহার, বেকারদের জন্য এক কোটি কর্মসংস্থান। প্রতিবছরে ২০ লাখ করে পাঁচ বছরে ১ কোটি। তরুণদের জন্য, এক কোটি বেকারের জন্য এক কোটি কর্মসংস্থান।’ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে সাদা পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি খেলা হবে। ৭ তারিখে ফাইনাল খেলা। বিএনপি কোথায়? কোথায় পালিয়েছে? পালিয়েছে কেন? ফাউল করে লালকার্ড, পালিয়েছে বিএনপি। এখন বোমা মারবে। তারেক রহমান টেমস নদীর ওপার থেকে নির্দেশ দিয়েছে, বোমা মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। ভুয়া, বিএনপি ভুয়া, এক দফা ভুয়া, ৩২ দল ভুয়া, মানববন্ধন ভুয়া, পদযাত্রা, সব আন্দোলন ভুয়া। বিএনপির অবরোধ, হরতাল ভুয়া। কিছুই মানে না পাবলিক। বিএনপি হচ্ছে ভুয়া।’
তিনি বলেন, ‘খেলা হবে, খেলা হবে, খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে। খেলা হবে বিএনপির সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরারা সাবধান। সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ৭ জানুয়ারি খেলা হবে সকাল-সন্ধ্যা। খেলা হবে একসাথে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, চিরতরে বিএনপিকে লালকার্ড দেখাতে হবে। ওরা অপেক্ষায় আছে আটলান্টিকের ওপার থেকে স্যাংশন আসবে, নিষেধাজ্ঞা আসবে। শেখ হাসিনা ভিসানীতি তোয়াক্কা করেন না, শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপারের স্যাংশনকে ভয় পান না। তিনি একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে ভয় পান। বাংলাদেশের মাটি, জনগণ আমাদের শক্তির উৎস। কোনো বিদেশি শক্তির হুমকি-ধমকি আমরা পরোয়া করি না। এটা শেখ হাসিনার কথা।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা অনুরোধ, ছাত্রলীগকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে আকর্ষণীয় করতে হবে। আজকে সাধারণ সভায় শুধু ছাত্রলীগ থাকবে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী থাকবে না। এটা অর্থহীন। ছাত্রলীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে মেধা, সাহসে, পড়াশোনা, পোশাক পরিচ্ছদে, চলাফেরায় আকর্ষণীয় হতে হবে, স্মার্ট হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ মানে ভাষণ দেওয়া নয়। গতানুগতিক একটা ভাষণ দিলাম, ১৯৪৮ সাল থেলে শুরু করলাম–এটা এখন কেউ শোনে না। কথা বলতে হবে স্মার্টলি, বলতে হবে চোখের ভাষা, মনের ভাষায়। বুঝতে হবে চোখের ভাষা, মনের কথা। এ কথা বললে মন শুনতে চাইবে। সেই কথা বলতে হবে যে কথা কর্তৃত্ব করবে, সেটাই বক্তৃতা। গৎবাধা মুখস্ত বক্তৃতা করে নেতা হওয়া যাবে না। নেতা হতে হলে নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করতে হবে।
সাধারণ ছেলেমেয়েদের বোঝাতে হবে, এই দেশ ভালো লোকদের হাতে থাকলে ভালো হবে। খারাপ লোকদের হাতে থাকলে, ভালো লোকেরা না আসলে রাজনীতি মূল্যহীন হয়ে পড়বে। রাজনীতিতে মেধাবীরা আসতে হবে, তা না হলে রাজনীতি মেধাহীন হয়ে যাবে। রাজনীতিতে চরিত্রবানদের আসতে হবে। ভালো লোক ক্ষমতায় এলে, এমপি-মন্ত্রী হলে দেশ ভালো চলবে। খারাপ লোকের হাতে দেশের দুঃশাসন অনিবার্য।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমাদের স্বপ্ন, লক্ষ্য শেখ হাসিনার কাছে নিরাপদ। শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশে আমাদেশ দেশ হবে ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি। আমাদের তরুণরা হবে বিলিয়ন ডলার উদ্যোক্তা। তরুণরা গুগল, মাইক্রোসফট, টেসলা, চ্যাটজিপিটি কিংবা এআইয়ের মতো নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবে। মফস্বলে বড় হওয়া তরুণী হয়তো ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে ঘুরে বেড়াবে। ভবিষ্যতে মহাকাশযানের গায়ে লেখা থাকবে বিজয় ১৯৭১।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিচ্ছি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ তরুণদের কমন ডেস্টিনেশন শেখ হাসিনা, নৌকার পক্ষে। যারা ষড়যন্ত্র করবে, নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। ছাত্রলীগ যুগে যুগে গণতন্ত্রের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের ভূমিকা পালন করেছে। আগামীতেও গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপর গানের তালে নৃত্য পরিবেশন করেন একদল শিল্পী। উদ্বোধন শেষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা নিয়ে টিএসসি, শাহবাগ, মৎস্যভবন হয়ে গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোভাযাত্রা শেষ হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী, কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী ও সাইফুর রহমান সোহাগ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শেখর, লেখক ভট্টাচার্য, গোলাম রাব্বানী, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ইউনিটসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক বর্তমান নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।